Seo Services

মায়াবতী পর্ব :৪

মায়াবতীপর্ব :৪

লেখা:রিপা
পরেরদিন স্কুলে যেতেই সাহিল এসে ঈশার সামনে দাঁড়ালো তখনি ঈশা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চইলে সাহিল হাত দিয়ে বাধা দিলো.....
সাহিল:কেনো এমন করছো ঈশা??কেনো তুমি আমার ভালবাসা বুঝছো না ??(করুন গলায়)
ঈশা:দেখো আমি তোমাকে সব বলেছি সাথে এটাও বলেছি আমি মিলিদের বাসায় আস্রিতা।তাও কেনো এমন করছো?? আর এমনিতেই আমি তোমার থেকে বয়সে বড়।হ্যা এটা ঠিক যে ক্লাসে আমি তোমার ছোট।এতে সত্যিটা তো আর পাল্টে যায় না। আর আমি তোমাকে আমার সব অতীত খুলে বলেছি।তাও কেনো বুঝতে চাইছো না??
সাহিল:তোমার যত প্রবলেমই থাকুক না কেনো তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই কারন আমি তোমায় ভালবাসি সাথে তোমার সমস্যাগুলোকেও।প্লীজ আর এসবের অজুহাত দিও না
ঈশা:আমি একজনকে ভালবাসি (মিথ্যা কথা)
সাহিল:আমি বিশ্বাস করি না
ঈশা:সেটা তোমার ব্যাপার। সামনে থেকে সরো ক্লাসে যাব
সাহিল:তুমি কেনো আমাকে বুঝতে চাইছো না??আমি যে তোমায় পাগলের মত ভালবাসি
ঈশা আর কোন কথা বাড়ালো না পাশ কাটিয়ে চলে আসলো।
প্রায় এক মাস পর
আজ সকাল সকাল ঈশানদের বাসায় ঈশানের ফ্রেন্ড রিহান এসেছে।কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলে দিলো ঈশানের মা
রিহান:আসসালামু আলাইকুম। আন্টি কেমন আছেন??
বড় মা:ওয়ালাইকুম সালাম।ভাল আছি। তুমি কেমন আছো??
রিহান:জি আন্টি ভালো।ঈশান কোথায়??
বড় মা:ওর রুমেই আছে। তুমি ভেতরে এসে বসো। আমি ডেকে নিয়ে আসছি
বড় মা:ঈশান(ঈশানের রুমে কাছে এসে)
ঈশান:হ্যা মা বলো??(শার্টের কলার ঠিক করতে করতে বললো)
বড় মা:রিহান আসছে
ঈশান:ও কেনো এসেছে(রেগে গিয়ে।রিহান যেদিন থেকে ঈশার কথা শুনেছে সেদিন থেকেই ঈশানের পেছনে পরে আছে ঈশার সাথে প্রেম করার জন্য। তাই ওর নাম শুনতেই রাগ বেড়ে গেলো)
বড় মা:এটা আবার কেমন কথা??বন্ধুর বাড়ি বন্ধু আসবে না?
ঈশা:বন্ধু না শত্রু( মনে মনে বললো)আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি
ঈশান তাড়াতাড়ি নিচে চলে গেলো।যাতে করে তাড়াতাড়ি রিহানকে বিদায় করতে পারে।ঈশান আর রিহান সেই কখন থেকে খাচ্ছে আর কথা বলেই যাচ্ছে। রিহান যাওয়ার কোন নামই নিচ্ছে না।(ঈশানের ওর মার প্রতিও রাগ হচ্ছে কেনো এত নাস্তা দিলো)ঈশানের এবার খুব বিরক্ত লাগছে...
ঈশান:চল বাহিরে যাই
রিহান:আরে এমন করছিস কেনো??আর কিছুক্ষণ থাকি না
ঈশান শুধু একটু বিরক্তিকরভাবে হাসলো।আর তখনি দেখলে ঈশা সিড়ি দিয়ে নামছে।একটা ব্লাক কামিজ সাথে সেট ওড়না, ম্যাচিং সালোয়ার পড়েছে।আজ অনেক সেজেছে ঈশা।এমনিতেই ঈশা অনেক ফর্সা তারর উপর ব্লাক কালার ড্রেসে অনেক মানিয়েছে।ওকে দেখেই ঈশান ঈশারা করলো উপরে চলে যেতে কিন্তু ঈশা কিছুই বুঝতে পারলো না।ঈশানের কাছে এসে.....
ঈশা:ভাইয়া কিছু বলবেন??
ঈশান রিহানের দিকে তাকিয়ে দেখলো রিহান হা করে তাকিয়ে আছে। চোখ দিয়ে গিলছে ঈশাকে।আর ঈশার তো সেদিকে কোন খেয়ালই নেই
ঈশান:তোর রুমে যা(দাঁত কটমট করতে করতে বললো)ঈশা তো সবসময়ই ঈশানের এমন রাগের সাথে পরিচিত তাই আর দেরি করলো না তাড়াতাড়ি নিজের রুমে চলে গেলো
ঈশান:এভাবে হা করে আছিস কেনো??(রিহানকে উদ্দেশ্য করে)
রিহান:ভাই এ আমি কি দেখলাম??
ঈশানে:কেনো??😡😡
রিহান:বিশ্বাস কর ভাই আমি এমন সুন্দরী মেয়ে জীবনেও দেখি নাই।আর আমি যদি ভুল না করি এটাই ঈশা।প্লীজ তুই আমার সাথে ওর রিলেশন করিয়ে দে
ঈশা:সালা কারাচ্ছি তোর রিলেশন😡😡।আর মেয়ে খুজে পাইলি না ওর দিকেই তোর নজর দিতে হলো😡😡(মনে মনে বললো)
রিহান:কিরে কিছু তো বল
ঈশান:সরি রে দোস্ত।ঈশা এ্যাংগেজড
(মন খারাপের বান ধরে)
রিহান:কি বলছিস তুই??ওকে দেখার জন্যই তো আমার আজ এখানে আসা।কত স্বপ্ন দেখছি ওকে নিয়ে এখন কি হবে??(কাদো কাদো গলায়)
ঈশান:সালা নিকুচি করি তোর স্বপ্নের। তোর সাহস হয় কি করে ওকে নিয়ে ভাবার??সালা ক্যারেকটার লেস একটা(মনে মনে)
রিহান:😭😭😭
ঈশান:আরে আরে কাঁদছিস কেনো??সবাই দেখলে কি বলবে বল তো(কান্নার অভিনয় করে)আমি জানি যে তোর ঠিক কতটা কষ্ট হচ্ছে।বিশ্বাস কর আমি ঈশাকে তোর জন্যই চুজ করেছি।যখনই মাকে বলবো ভেবেছি তখনি শুনলাম ঈশার এ্যাংগেজ হয়ে গেছে(ডাহা মিছা কথা)
রিহান:আসি রে। ঈশা আমার ভাগ্যে নাই😭😭😭
ঈশান:হুম।যা😜😜😜
রিহান চলে যেতেই ঈশান ঈশার রুমের দিকে পা বাড়ালো
মিলি:আপু তুমি আজ অনুষ্ঠানে কি পারফর্ম করছো??
ঈশা:কিচ্ছু না
মিলি:কেনো??
ঈশা:আমার ভয় লাগে।পরে যখন কোন অনুষ্ঠান হবে তখন ট্রাই করবো।তুমি কি পারফর্ম করছো??
মিলি:হুম।তুমি তো মোটামোটি ভালই ডান্স করতে পারো।তুমি একটা ডান্স কর প্লীজ।
ঈশা:আরে না।কি যে বল আমার ভয় লাগে। আমি এসব করতে পারব না।তা তুমি কি করবে??
মিলি:গান গাইবো
তখনি ঈশান ঈশার রুমে ঢুকলো
ঈশান:মিলি তুই গাড়ীতে ওয়েট কর। আমি আর ঈশা একটু পরেই আসছি
ঈশানকে দেখেই ঈশা উঠে দাঁড়ালো। মিলি চলে যেতেই রাগী লুক নিয়ে ঈশার দিকে এগুতে লাগলো ঈশান
ঈশা:আমি কি...কি...কি করেছি(ভয়ে পিছু হাটতে হাটতে বললো)
ঈশান কিচ্ছু বললো না শুধু ঈশার দিকে এগুতে লাগলো।পিছু হাটতে হাটতে ঈশার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলো।ঈশান একেবারে ঈশার কাছে এসে দাঁড়ালো। ঈশা চোখ বন্ধ করে দেয়ালের সাথে মিসে আছে। ঈশান কখন থেকে ঈশার দিকে তাকিয়েই আছে।ঈশানেরর কোন রিয়াকশন না দেখে ঈশা চোখ খুললো।ঈশা চোখ খুলতেই ঈশান দুই হাত দিয়ে ঈশার মুখটা উচু করে ধরে ঠোঁটে চুমো খেতে লাগলো। এদিকে ঈশার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম তাও ঈশানের ছাড়ার কোন নামই নেই।যতক্ষণ ঈশার ঠোঁটে লিপস্টিক ছিলি ঠিক ততক্ষণ ঈশান ঈশার ঠোঁটে চুমু খেলো।তারপর ঈশার কপালের টিপ টাও ফেলে দিলো।ঈশার ঠোটজোড়া একেবারে লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এক্ষুনি রক্ত ঝরবে.....
ঈশান:এবার শেষ লিপস্টিক খাওয়া।আর যেন কক্ষনো লিপস্টিক দিতে না দেখি।কতবার বলেছি সাজতে না তাও মহারানীর সাজা লাগবে।কি দরকার ছিলো সেজেগুজে ওই ছেলেটার সামনে যাওয়ার??(রাগে কথা গুলো বললো)
ঈশা:আমি কি জানতাম নাকি যে ওখানে ওই ছেলেটা আছে(কাদো কাদো গলায় বললো)
ঈশান:না জানতেন বেশ ভাল কথা। এভাবে সাজতে কে বলেছে??আমি যে সাজতে না বলেছি সেটা মাথায় ছিল না?? (দাঁত কটমট করতে করতে বললো)
ঈশা:আজ স্কুলে একটা অনুষ্ঠান আছে তাই মিলি জোড় করে আমায় সাজিয়ে দিয়েছে😞😞
ঈশান :হয়েছে আর নিজের হয়ে সাফাই গাইতে হবে না।আমাকে শেখানো হচ্ছে।স্কুলে অনুষ্ঠান হলেই যে সেজেগুলে যেতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।স্কুল ড্রেস পড়েও যাওয়া যায়। ড্রেসটা চেঞ্জ করে স্কুল ড্রেস পড়ে নিন।আর হ্যা অনুষ্ঠানে ভুলেও কোন পারফর্ম করবি না.....
ঈশা:পারব না এখন ড্রেস চেঞ্জ করতে😒😒
ঈশান:ওকে পারতে হবে না।বলেই ঈশাকে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।ড্রেসিংটেবিলের উপরে একটা কাচি দেখলো।কাচিটা দিয়ে ঈশার পেছনের কামিজটা লম্বা করে কেটে দিলো।ঈশা তাড়াতাড়ি হাত দিয়ে ছেরা কামিজটা ধরলো.....
ঈশা:এটা আপনি কি করলেন??😡😡ঈশান:কেনো তুমিই তো বললে চেঞ্জ করতে পারবে না তাই চেঞ্জ করার ব্যবস্থা করে দিছি।
ঈশা:সত্যি আপনি খুব খারাপ।একটা শয়তান আপনি
ঈশান:আর??(ঈশার দিকে এগুতে এগুতে বললো)
ঈশা:বজ্জাত (পিছু হাটতে হাটতে বললো)
ঈশান:আর???
ঈশা:আপনি একটা রাক্ষস (বলেই দৌড়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো)
আয়নায় পেছনের ছেরা কামিজটা দেখতে লাগলো প্রায় অনেকখানি কেটে ফেলেছে।
ঈশা:অসভ্য লোক একটা আমার ঠোটটার কি অবস্থা করছে??সবাই দেখলে এখন কি ভাববে??আবার কি দরকার ছিলো কামিজটা কাটার। রাক্ষস একটা(একা একা বিড়বিড় করলো)
ঈশান:কি বিড়বিড় করছো?? তাড়াতাড়ি বের হও স্কুলের সময় হয়ে যাচ্ছে তো
এবার বাধলো আর এক বিপত্তি ড্রেস চেঞ্জ করবে অথচ কোন ড্রসই নেওয়া হয়নি
ঈশা:মিলি, এই মিলি
ঈশান:মিলি এখানে নেই।কি বলবেন বলে ফেলুন
ঈশা:আমার স্কুল ড্রেসটা একটু দিতে পারবেন
ঈশান:কোথায় রেখেছিস
ঈশা:ওয়ারড্রবেরর মধ্যে
ঈশান:পারব না খুজতে।এই তোয়ালে দিচ্ছি এটা পরে বের হ।পরে ড্রেস চেঞ্জ করে নিস
ঈশা ওয়াসরুমের দরজাটা সামান্য ফাকা করে তোয়ালেটা নিলো।।কিছুক্ষণ পর
ঈশান:কি হলো এখনো হয় নি??
ঈশা:আপনি রুম থেকে বের হন
ঈশান:ওকে।ঈশান রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই ঈশা রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো।তারপর ড্রেস চেঞ্জ করে তাড়াতাড়ি নিচে চলে গেলো
গাড়ীর মধ্যে
মিলি:ঈশা আপু এটা কি করেছো তুমি??
ঈশা:কেনো??
মিলি:তোমাকে আমি এত সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছি আর তুমি সব উঠিয়ে ফেলেছো।তারপর ওই ড্রেসটা পরলেও তো হতো😞😞
ঈশা:ড্রেসটা ইদুরে কেটে ফেলছে
মিলি:কি বল??আমাদের বাসায় ইদুর আসবে কিভাবে?
ঈশা:আরে এটা সেই ইদুর না। মানুষরূপী বড়সড় ইদুর।ঈশা এসব বলছে আর ঈশান মিটিমিটি হাসছে
মিলি:কি বলছো এসব?মানুষরূপী ইদুর মানে??
ঈশা:তুমি এসব বুজবে না।পরে বুঝিয়ে বলবো তোমাকে
মিলি:ঈশা আপু আমার দিকে ভাল করে তাকাও তো
ঈশা:কেনো কি হয়েছে??(ঈশার দিকে তাকিয়ে)
মিলি:এই আপু তোমার ঠোঁটের এ অবস্থা কি করে হলো??আমি যখন সাজিয়েছি তখন তো ঠিকই ছিলো
ঈশা:আর বলনা রাক্ষসে এমন করছে😡😡
মিলি :উফ ঈশা আপু তুমি আজ এসব কি উল্টাপাল্টা বকছো??
এবার ঈশান হা হা করে হেসে দিলো।ঈশানের হাসি দেখে ঈশার আরও বিরক্তি লাগছে
মিলি:ভাইয়া তুই এভাবে হাসছিস কেনো??
ঈশান:এমনি😂😂😂
স্কুলে পৌছানোর পর
সাহিল:এই তুমি আজ একটুও সাজোনি কেনো??(ঈশার সামনে এসে দাঁড়িয়ে)
ঈশা:আমার ইচ্ছা হইছে তাই।আর তুমি প্রতিদিন আমার পথ আগলে দাড়াও কেনো??
সাহিল:তোমার সাথে কথা বলার জন্য
ঈশা :আমি তোমাকে আর কতবার বলবো যে আমি তোমাকে ভালবাসি না।স্কুলে আসলে ডিস্টার্ব কর আবার ফোনেও ডিস্টার্ব কর।কেনো এমন করছো??
সাহিল:ভালবাসি তাই
ঈশা:ওকে। তুমি তো আমায় ভালবাসো তাই তো??
সাহিল:হুম
ঈশা:কি করতে পারবে আমার জন্য??
সাহিল:তুমি যা বলবে তাই।তবে আমার একটা শর্ত আছে??
ঈশা:কি শর্ত??
সাহিল:আমি তোমার সব কথা শুনব।তবে প্রতিদিন একবার হলেও আমার সাথে ফোনে কথা বলতে হবে
ঈশা:ওকে।
সাহিল:এবার তুমি কি বলবে বলো??
ঈশা:তুমি গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট না করা পর্যন্ত আমাকে আর কখনো ভালবাসার কথা বলবে না।আমরা শুধু ভাল বন্ধু হয়েই থাকবো।যখন তোমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয় তখনই আমরা বিয়ে করবো।আর আমি স্কুলে আসলে আমার ধারেকাছে বেশি আসবে না
সাহিল:আমি এত কিছু মানতে পারবো না
ঈশা:তাহলে আমাকে কখনো পাবেও না
সাহিল:ওকে আমি রাজি(মন খারাপ করে)
ঈশা:সরি সাহিল।এছাড়া তোমাকে আমার থেকে দূরে সরানোর আর কোন উপায় নেই।আমি যে কখনই তোমাকে ভালবাসতে পারবো না।আর আমি এটাও জানি ততদিনে তুমি আমাকে ঠিক ভুলে যাবে (মনে মনে বললো)
সাহিল:এই ঈশা কোথায় হারিয়ে গেলে??
ঈশা:না না হারাই নি(ধ্যান ভেঙ্গে)চলো একটু পরেই অনুষ্ঠান শুরু হবে
সাহিল:হুম চলো
কিছুক্ষণের মধ্যেই অনুষ্ঠান শুরু হয় গেলো।অনুষ্ঠান যখন প্রায় শেষ পর্যায় তখনি মিলি স্টেজে এসে গোষনা করলো....
মিলি:এখনি আপনাদের সামনে নৃত্য পরিবেশন করবে ইশরাত জাহান ঈশা
আর সবাই হাতে তালি দিতে শুরু করলো।ঈশা তো মিলির কথা শুনে পুরাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।মিলি স্টেজে যাওয়ার জন্য বারবার ঈশাকে ডাকছে।বাধ্য হয়ে ঈশা স্টেজে গিয়ে ডান্স করতে লাগলো।সবাই মুগ্ধ হয়ে ঈশার ডান্স দেখতে লাগলো।সাহিল তো পুরাই হা করে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে কোন রকম প্রিপারেশন ছাড়া এত সুন্দর করে কেউ কি করে ডান্স করতে পারে।
আর এদিকে ঈশান সেই কখন থেকে গেটের সামনে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। আর বসে থাকতে পারলো না গাড়ী থেকে নেমে স্কুলের মধ্যে প্রবেশ করলো।ভেতরে এসেই মাঠের মাঝখানে বড়সড় ভির দেখলো।ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকেই দেখলো ঈশা ডান্স করছে।আর সবাই হা করে দেখছে।মেজাজটা প্রচন্ড রকমে খারাপ হয়ে গেলো ঈশানের।ডান্স শেষে ঈশা যখন স্টেজ থেকে নেমে আসলো তখনি সাহিল ঈশার হাত ধরে সবার থেকে একটু আড়ালে নিয়ে গেলো...
ঈশা :এখানে এনেছো কেনো??
ঈশা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাহিল ঈশার হাতে কিস করে বসলো। ঈশা তাড়াতাড়ি সাহিলকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলো.
ঈয়া:এটা কি করলে?😡😡
সাহিল:সরি। অনেক বেশি এক্সাইটেড হয়ে পরেছি তোমার ডান্স দেখে তাই এই রকম ভুল হয়ে গেছে।প্লীজ কিছু মনে করো না।
ঈশ:তুমি আমার সাথে আর কক্ষনো কথা বলবে না।বলেই চলে আসতে নিলো তখনি সাহিল ঈশার হাতটা ধরে ফেললো
ঈশা:সাহিল হাতটা ছাড়ো(রেগে গিয়ে)
সাহিলও ঈশার এমন রাগ দেখে হাতটা ছেড়ে দিলো।দূর থেকে দাঁড়িয়ে সবটা দেখলো ঈশান
ঈশা হাতটা ছাড়িয়ে সামনে এগুতেই ঈশানের সামনে পড়লো।ভয়ে ঈশার অবস্থা জড়সড়
ঈশা:আ...আ..আপনি এখানে??
ঈশান:কেনো এক্সপেক্ট করিসনি মনে হয়??
ঈশা:না মানে।হ্যা
ঈশান আর কিছু বললো না ঈশার হাতটা ধরে নিয়ে এসে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।মিলিও তাড়াতাড়ি এসে গাড়িতে বসলো.....
পুরো রাস্তায় একটাও কথা বললো না ঈশান।বাড়িতে এসেই সবার সামনে থেকে হাত ধরে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসলো.....
রুমে এসেই দটজাটা ঠাস করে বন্ধ করে দিলো
বড় মা:কিরে মিলি কি হয়েছে??ঈশান এভাবে ঈশাকে টেনে নিয়ে গেলো কেনো??
মিলি:প্লীজ বড় মা তুমি ঈশা আপুকে বাঁচাও। আজ কি যে করবে ভাইয়া ঈশা আপুরর সাথে আল্লাহই জানে
বড় মা:কেনো??কি করেছে ঈশা??
এরপর মিলি সবটা খুলে বললো
বড় মা:এতে ঈশার দোষটা কোথায়?এই ছেলেটা পারেও বটে।কি যে করি আমি..
ঈশানের রুমের সামনে..
বড় মা:ঈশান বাবা দরজাটা খোল
ঈশান:মা তুমি এখান থেকে যাও
বড় মা:তোর সাথে আমার কথা আছে।দরজাটা খোল
ঈশান:মা তুমি এখান থেকে যাও আমাকে ডিস্টার্ব করো না(চিৎকার করে বললো)
ঈশানের মা ছেলের এমন রাগের সাথে পুরাই অভ্যস্ত। তাই আর দেরি করলো না সেখান থেকে চলে গেলো
ঈশা রুমের এক পাশে ভয়ে গুটিসুটি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আর ঈশান চুপচাপ বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে আছে
ঈশান:কতদিনের সম্পর্ক ছেলেটার সাথে??(শান্ত গলায়)
ঈশা:কোন সম্পর্ক নেই😞😞
ঈশান :মিথ্যে বলবি না
ঈশা:আমি মিথ্যে বলছি না
ঈশান:ও রিয়েলি!!??
ঈশা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।তখনি ঈশার ফোনে ম্যাসেজ টোণ বেজে উঠলো।ম্যাসেজের শব্দ শুনে ঈশা প্রায় লাফিয়ে উঠলো।ঈশান ঈশার ব্যাগটা নিয়ে ম্যাসেজটা পড়লো
I love u esa.Don't angry with me.I am so sorry. love u
ঈশান জোড়ে জোড়ে ম্যাসেজটা পড়লো।এরপর একে একে সবগুলো ম্যাসেজ পড়লো ঈশার সামনে।ঈশা ভয়ে একেবারে চুপসে গেছে
ঈশান:ওয়াও গ্রেট। তাহলে এত প্রেম চলছে আপনাদের মধ্যে??
ঈশা:আমি ওকে ভালবাসি না। ওই আমাকে ভালবাসে
ঈশান রাগ রাগটা কন্ট্রোল করতে পারলো না।ঠাস করে ঈশাকে চড় বসিয়ে দিলো......
ঈশান :তোর যা ইচ্ছা তা কর আমার সাথে কেনো মিথ্যা বলছিস??.খুব চুমু খাওয়ার শখ হয়েছে না??আজ আমি তোর চুমু খাওয়ার সব শখ মিটিয়ে দিব।
বলেই ঈশার দিকে এগুতে লাগলো।
ঈশা:বিশ্বাস করুন ভাইয়া আমি জানতাম না সাহিল এমন একটা কাজ করবে(ভয়ে ঢোক গিলতে গিলতে)
ঈশান ঈশার কাছে এসে ঈশার হাতটা ধরলো....।ঈশা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু ঈশান কিছুতেই ছাড়ছে না।ঈশান ঈশার পুরো হাতে কিস করলো।এরপর মুখে,গলায়,ঘাড়ে কিস করতে লাগলো ঈশা বাধা দিচ্ছে তাও শুনছে না।ঈশা বাধা দিচ্ছে দেখে ঈশান ঈশার দুটো হাত নিজের মুঠোর মধ্যে নিয়ে নিলে।ঈশা অনেক ভাবে চাইছে ঈশানের থেকে মুক্ত হতে কোনভাবেই পারছে না।ঈশান ওর মত করেই কিস করে যাচ্ছে। যখনই ঈশান ঈশার গলার একেবার নিচে কিস করলো....
ঈশা:প্লীজ ছাড়ুন আমায়(চিৎকার করে)
ঈশার চোখ, নাক,মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে।রাগে ঈশা পুরো কাঁপছে।ঈশান সঙ্গে সঙ্গে ঈশাকে ছেড়ে দিলো..
ঈশা:আপনার আমাকে কি পশু মনে হয়??আপনাদের বাসায় থাকি বলে আমার সাথে যখন যা ইচ্ছা তাই করবেন??অবশ্য আপনাদের মত বড় লোকদের থেকে এর থেকে আর বেশি কি বা আশা করা যায় বলুন??।সাহিল আমাকে একটা কিস করেছে তাতে আপনার এগ রাগ।অবস্য আপনার রাগ তো হওয়ারই কথা আপনার শিকারে হাত বসিয়েছে। প্রতিনিয়ত আপনি আমার সাথে যা করেন তার বেলায় তো কিছুই না?সাহিল আপনার থেকে হাজারগুন ভাল।আপনার মত ওর আমার শরীরের উপর কোন মোহ নেই
আপনাদের খাই পড়ি বলে এখন আপনাকে আমার শরীরটাও বিলিয়ে দিতে হবে তাই তো??
কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ঈশান সমস্ত শক্তি দিয়ে ঈশাকে থাপ্পড় মারলো
ঈশান:তোর সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার??
ঈশান:ও আমি তো ভুলেই গেছি আশ্রিতাদের তাদের মনিবের সাথে গলা উচু করে কথা বলতে নেই।যদি সেই মনিব বিছানাতেও টেনে নিয়ে যায় তাও নয়
ঈশান:ঈশা লিমিট ক্রোস করিস না
ঈশা:কি করবেন?শাস্তি দিবেন??অবস্য এর থেকে ভাল আপনি আর কিইবা পাড়েন??
ঈশান:বাহ!!কি সুন্দর মাত্র দুমাসের পরিচয়েই ওই ছেলেটা আপন হয়ে গেলো।আর আমি খারাপ হয়ে গেলাম।
কেনো আমি এমন করি একবারও কি বুঝতে চেয়েছিস??আরে আমার যদি তোর শরীরের প্রতি এতই মোহ থাকতো তাহলে তুই এখনো ভাল থাকতে পারতি না।সবসময় যাতে তোর কোন বিপদ না হয় ওই জন্য আগলে রাখার চেষ্টা করি
ঈশা:আমি তে বলিনি আমাকে আগলে রাখেন।তাহলে.....
ঈশান:ভালবাসি বলেই তো আগলে রাখি।ভালবাসি বলেই সবসময় শাসন করি।ভালবাসি বলেই বারবার ম্যাসেজ দিয়ে জানতে চাই সব ঠিক আছে কিনা।ভালবাসি বলেই সব প্রতিকূলতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই।ভালবাসি বলেই সাঝতে বারন করি।ভালবাসি বলেই এত কেয়ার করি।ভালবাসি বলেই কেউ চোখের সামনে কিস করলে কষ্ট হয়।ভালবাসি বলেই কেউ হা করে তাকিয়ে থাকলে সহ্য হয় না খুব কষ্ট হয় এই কষ্ট পাওয়াটা কি আমার অপরাধ??? (বিছানায় বসে একদমে কথা গুলো বলে থামলো ঈশান।)
ঈশা ঈশানের কথা গুলো শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ঈশানের দিকে।ঈশানের চোখে পানি টলমল করছে।চোখের পানি পরে যাওয়ার আগেই হাত দিয়ে মুছে ফেললো ঈশান।ঈশার এই মূহুর্তে খুব খারাপ লেগছে।এত বছরে ঈশা কখনো ঈশানকে কাঁদতে দেখেনি।ঈশা আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে ঈশানের পাশে বসলো....
ঈশান সেখান থেকে চলে যেতে নিলেই ঈশা ঈশানের হাতটা ধরে ফেললো..
ঈশা:সরি
ঈশান:সরি বলার কি আছে। তুই এখান থেকে যা এখানে থাকাটা তোর জন্য রিস্কি।বলা তো যায় না কখন কি হয়ে যায়
ঈশা:সরি। আমার ভুল হয়ে গেছে
ঈশান:তোর কোন ভুল হয়নি।যা ভুল করেছি সব আমার ভুল। চিন্তা করিস আর তোকে ডিস্টার্ব করবো না। আজ থেকে তুই মুক্ত। তোর যা ইচ্ছা করতে পারিস...
ঈশা:প্লীজ আমায় ক্ষমা করুন
ঈশান:অনেক হয়েছে তুই এখন বের হ এই রুম থেকে
ঈশা:আমি যাব না যতক্ষণ না আপনি আমায় ক্ষমা করুন😭😭😭😭
ঈশান:ওকে তোর যেতে হবে না।বলেই ঈশাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে রুমের বাহিরে বের করে দেয়।এরপর ঈশান ঈশার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয়
ঈশান রুমের মধ্যের সব কিছু ভাংচুর শুরু করে দেয়।ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় ঘুসি দিয়ে আয়নাটা ভেঙ্গে ফেলে।হাত কেটে রক্ত পরতে থাকে ঈশানের।
ঈশা:প্লীজ দরজাটা খুলুন😭😭😭
ঈশান:.......
ঈশা:বড় মা তাড়াতাড়ি উপরে চল ঈশান ভাইয়া সব ভেঙ্গে ফেলছে
সবাই দৌড়ে উপরে আসলো.......
রেহানা চৌধুরী:দাদুভাই দরজাটা খোল না।কি হয়েছে দাদুকে বলবি না
ঈশান:দাদু তুমি এখন এখান থেকে যাও আমার একটুও ভাললাগছেনা
বড় মা:বাবা দরজাটা খোল
সবার অনুরোধে শেষমেশ দরজা খুললো।সাথে সাথে সবাই রুমে ঢুকলো। ঈশাও ওদের সাথে ঢুকলো।সব কাচ ছড়িয়ে সিটিয়ে পরে আছে
বড় মা:তুই এসব কি করেছিস ঈশান??
ঈশান:তোমরা কি প্রশ্ন করার জন্যই দরজা খুলতে বলেছো
তখনি রেহানা চৌধুরী দেখলো ঈশানের হাত কেটে রক্ত পরছে।
রেহানা চৌধুরী:দাদুভাই হাত কাটলি কিভাবে??বলেই ঈশানের হাতটা ধরলো
ঈশান:কিচ্ছু হয়নি। বলেই হাতটা ছাড়িয়ে নিলো
বড় মা:কিচ্ছু হয়নি বললেই হলো।দেখি ব্যান্ডেজ করে দেই।(এরপর মিলিকে ফাস্টএইড বক্স আনতে বললো)
ঈশান :লাগবে না
বড় মা:থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেব।বেশি বড় হয়ে গেছিস
মায়ের বকুনি খেয়ে চুপ করে রইলো ঈশান।এরপর ওর মা হাতটা ব্যান্ডেজ করে দিলো
চলবে,,,,,,
মায়াবতী পর্ব :৪ মায়াবতী পর্ব :৪ Reviewed by EasyTalk on 10:47 PM Rating: 5

No comments:

Music

ads 728x90 B
Powered by Blogger.